Bhoot Chaturdashi Wishes in Bengali: ধনতেরাসের পরের দিন পালিত হয় ভূত চতুর্দশী। এটি আবার নরক চতুর্দশী নামেও পরিচিত। বিভিন্ন জায়গায় কার্তিক কৃষ্ণ পক্ষের চতুর্দশী তিথিটি রূপ চতুর্দশী বা রূপ চৌদস নামেও পরিচিত। পশ্চিমবঙ্গে এই তিথিটি ভূত চতুর্দশী হিসেবে পালিত হয়। পশ্চিমবঙ্গে ভূত চতুর্দশীর দিনে ১৪ শাক খাওয়ার প্রথা প্রচলিত আছে পাশাপাশি এ দিন ১৪ প্রদীপ ও জ্বালানো হয়।
{tocify} $title={Table of Contents}
বিশ্বাস অনুযায়ী, ভূত চতুর্দশীর দিনটি ১৪ পুরুষের জন্যে উৎসর্গ করা হয়। এই বিশেষ দিনে পূর্বপুরুষরা মর্ত্যে আসেন। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, এই ১৪ পুরুষ , জল, মাটি, বাতাস ও অগ্নির সঙ্গে মিশে রয়েছেন। আর এজন্যেই মূলত মাটির মধ্যে জন্মানো ১৪ টি বিশেষ শাক খেয়ে ১৪ পুরুষদের উৎসর্গ করা হয় ভূত চতুর্দশীর দিনটি।
Bhoot Chaturdashi Date and Time 2022
ভূত চতুর্দশী তিথি ২৩ অক্টোবর সন্ধ্যে ৬ টা ০৪ মিনিটে শুরু হবে। আর তা শেষ হবে ২৪ অক্টোবর বিকেল ৫ টা ২৮ মিনিটে। উদয় তিথি অনুসারে নরক চতুর্দশী বা ভূত চতুর্দশী পালিত হবে ২৪ অক্টোবরই।
এই দিন কেন ১৪ রকমের শাক খাওয়া হয়?
কথিত আছে যে, কালীপুজোর আগের রাতে এই পূর্বপুরুষদের আত্মা পৃথিবীতে নেমে আসে। তাই প্রদীপ জ্বালানোর পাশাপাশি ভূত চতুর্দশীতে ওল, নটে, বেতো, সর্ষে, কালকাসুন্দে, জয়ন্তী, নিম, হেলঞ্চা, সজনে, পলতা, গুলঞ্চ, ভাঁটপাতা, শুলফা, শুশনি, এই চোদ্দ ধরনের শাকও খাওয়ার রীতি আছে।
Read More:
বিশ্বাস করা হয়, মৃত্যুর পর দেহ পঞ্চভূতে (আকাশ, মাটি, জল, হাওয়া, অগ্নি) বিলীন হয়ে যায়। এই পাঁচ উপাদানের মধ্যেই মিশে থাকেন পূর্বপুরুষরা। তাই প্রকৃতি থেকে সংগ্রহ করা ১৪ রকমের শাক মৃত ১৪ পুরুষের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়। এই চোদ্দ শাক ধোওয়া জল ছিটিয়ে দেওয়া হয় বাড়ির প্রতিটি কোণে। এর ফলে অশুভ শক্তি দূর হয় ও বাধা-বিঘ্ন কেটে যায়।
ভূত চতুর্দশীর রাতে ১৪টি প্রদীপ কেন জ্বালানো হয়?
প্রচলিত কথা অনুযায়ী, রাক্ষস রাজ বলি স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল নিজের দখলে রাখার জন্য প্রবল অত্যাচার শুরু করে। দেবতারাও বাদ যাননি। এই পরিস্থিতি ঠিক করতে বামনের ছদ্মবেশে রাক্ষসরাজ বলির কাছে বিষ্ণু তিন পা জমি ভিক্ষা চান। এতে বলি রাজি হতেই, বিষ্ণু দুটি পা একটি মর্ত্যে ও একটি স্বর্গে রাখেন। আর আরেকটি পা তাঁর নাভি থেকে বেরিয়ে আসে এবং সেটি তিনি রাখেন পাতালে। এই ছলনার পর বলিকে করুণা দেখিয়ে ভগবান বিষ্ণু বলেন, প্রতি বছর রাক্ষস রাজ ও তার সাঙ্গপাঙ্গের পুজো হবে পৃথিবীতে। আর সেই পুজোর তিথিই হল ভূত চতুর্দশী।
পুরাণ মতে, এই ভূত চতুর্দশীর রাতেই দানব রাজা বলি ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা মর্ত্যে আসেন পুজো নিতে। আর অমাবস্যা রাতের অন্ধকারে বলি ও তার সঙ্গীরা যাতে পথ ভুলে বাড়িতে ঢুকতে না পারেন, তার জন্য প্রদীপ জ্বালানো হত।
কার্তিক মাসের শেষ চতুর্দশী তিথিতে পালন করা হয় এটি। যেহেতু চতুর্দশীর দিন এই রীতি পালন করা হয়, তাই ১৪ সংখ্যাটিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই দিনে সমস্ত অন্ধকার ঘোচাতে বাড়িতে ১৪টি আলো বা প্রদীপ জ্বালানো হয়। এছাড়া বিশ্বাস করা হয় যে, এই প্রদীপগুলি ভূত-প্রেত, অশুভ শক্তি বা অশুভ আত্মাকে দূরে করে রক্ষা করবে পরিবারের সকলকে। অনেকেই আবার বলে থাকেন, এই প্রদীপ পূর্বপুরুষদের গত ১৪ প্রজন্মের স্মরণে জ্বালানো হয়।