শুভ সপ্তমী কবিতা : Subho Saptami Kobita in Bengali – হিমের পরশ লাগে প্রাণে শারদীয়ার আগমনে। আগমনের খবর পেয়ে বনের পাখি উঠলো গেয়ে। শিশির ভেজা নতুন ভোরে, মা এসেছে আলো করে।

শুভ সপ্তমী কবিতা
শুভ সপ্তমী
লেখক – রঞ্জন গিরি
শুভ সপ্তমীর শুভেচ্ছা রইল
আজ শনির শরণাপন্নে,
উদিত হোক উজ্জ্বলতম রবি
সুখী হোক সবে সায়াহ্নে।
জনজোয়ারের জৌলুস আজ
সারা বিশ্ব দেখুক বিষ্ময়ে,
মিত্রতা যে মোদের মেলবন্ধন
আতিথিয়তার থিম আশ্রয়ে।
সমন্বয়ের সৃষ্টি এই শক্তি পূজায়
ঈশ্বর, ইসলাম একাকার,
উন্মুক্ত প্রীতির এই উৎসবের
অধিকারের অর্থ সবাকার।
মহা সপ্তমী পূজা
লেখক – লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
মহা সপ্তমীর পূজা বিদিত ভুবনে,
মহাশক্তি আরাধনা ভক্তিযুক্ত মনে।
ঢাকীরা বাজায় ঢাক শঙ্খঘণ্টা বাজে,
মণ্ডপের বেদি পরে দুর্গামা বিরাজে।
নদীঘাটে দোলা নিয়ে করয়ে গমন,
মহাস্নান সেরে বিপ্র করে আগমন।
শিশু যুবা বৃদ্ধগণ সকলেই আসে,
সকালের সোনারোদ নদীতটে হাসে।
পুরোহিত করিছেন স্তব মন্ত্র পাঠ,
মণ্ডপের চারিপাশে প্যাণ্ডেল বিরাট।
শঙ্খ ঘণ্টা ধূপ দীপ প্রসাদের থালা,
ঘটে দেয় ধান দূর্বা আর ফুল মালা।
বিধিমতে সপ্তমীর পূজা সমাপন,
পূজা অন্তে করা হয় প্রসাদ বণ্টণ।
- আরও পড়ুন:
- 👉 ১০ টি সেরা দূর্গা পূজার কবিতা
- 👉 ৫ টি সেরা মহালয়ার কবিতা
আমার কবিতা
লেখক – লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
বাংলার ঋতুচক্র ঘুরে শরত্কালের পরেই আসে হেমন্তকাল। আর এই ঋতুই শস্যের উদ্ভবকাল। তারই আগমনী যেন ঘোষিত হয় এই শারদীয়া পুজায়। প্রতিমার পাশে তাই নব পত্রিকা স্থাপন করা হয়। কলা (ব্রক্ষাণী), কচু (কালিকা), হলুদ (দুর্গা), জয়ন্তী (কৌমারী), বিল্ব (শিবা), ডালিম (রক্ত দন্তিকা), অশোক (শোকর হিতা), মানকচু (চামুণ্ডা) এবং ধান (রক্ষ্মী)। এরা বোধনের পর আলাদাভাবে পূজিত হলেও কালক্রমে দুর্গার সঙ্গে সম্মিলিত হয়েছে। শ্বেত অপরাজিতা লতা সর্ববিজয় প্রদায়িনী দেবী মহামায়ার বিশেষ রূপ। তাই এই লতা দিয়ে নবপত্রিকাকে বেষ্টন করা হয়।
মায়ের দশহাতে ত্রিশূল, খড়গ, সুদর্শন চক্র, ধনুর্বাণ, শক্তি খেটক, পূর্নচাপ, নাগতালা, অংকুশ ও পরশু এ ধরনের অস্ত্র দেখা যায় বলে তিনি দশ প্রহরণ ধারিত্রী। মহালয়ার পিতৃপক্ষের তিলাঞ্জলি তর্পনের পর হয় দেবীপক্ষের সূচনা। সৌর আশ্বিনের কৃষ্ণপক্ষের নাম ‘মহালয়’। মহালয় শব্দ থেকে ‘মহালয়ার’ এর উত্পত্তি।
ষষ্ঠী তিথিতে দুর্গার বোধন সপ্তমীতে মূতির প্রাণ প্রতিষ্ঠা। অষ্টমী ও নবমীতে মহাপূজা ও দশমীতে দেবীর বিসর্জন। এই পূজার বিশেষত্ব হল সন্ধিপূজা অষ্টমী ও নবমী তিথির মিলনক্ষনে সন্ধিপূজা। অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে রামচন্দ্র রাবনের দশটি মুন্ড ছিন্ন করেছিলেন। তাই এই সময়ে পূজার মাহাত্ম্য বেশি।
তবে যাই হোক, দুর্গাপুজো বাঙালির জীবনে অন্যতম উত্সব। সারা বছর বাদে বাইরে থেকে এসে বহু মানুষ মিলিত হন এই উত্সবে। বহু শিল্পীর সারা বছরের রুজি রোজগারও জড়িয়ে থাকে এই ৫ দিনের পুজোর সঙ্গে। তাই আক্ষরিক অর্থেই, দুর্গাপুজো হল বাঙালির শ্রেষ্ঠ উত্সব।
শারদীয়া দুর্গাপূজা জাতীয় জীবনে সর্বাঙ্গীন। তাই বাংলা কবিতা আসরের সকল কবি ও সহৃদয় পাঠকবৃন্দকে জানাই শুভ মহাষষ্ঠীর শুভকামনা, প্রীতি আর শুভেচ্ছা। বাংলা কবিতার জয় হোক, কবিগণের জয় হোক।
আসুন আমরা সকলেই জাতিধর্ম নির্বিশেষে শক্তির আরাধনায়
রত হয়ে শারদীয়া দুর্গাপূজার আনন্দে মেতে উঠি।
জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!
মহা সপ্তমী দুর্গাপূজা
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
মহা সপ্তমীর পূজা ভারি ধূম-ধাম,
ভক্তিভরে সবে করে দেবীরে প্রণাম।
মন্দিরেতে বাজে ঢাক, বাজায় কাঁসর,
পূজার প্যাণ্ডেলে হেরি শোভা মনোহর।
শঙ্খ, ঘণ্টা, ধূপ, দীপ বরণের ডালি,
দেবীর সম্মুখে শোভে প্রসাদের থালি।
পূজান্তে প্রসাদ ভোগ হয় বিতরণ,
মহানন্দে করে সবে প্রসাদ ভক্ষণ।
সন্ধ্যায় ধুনুচি নাচ ঢাক ঢোল বাজে,
ঢাকীরা বাজায় ঢাক সকলেই নাচে।
ধন্য ধন্য দুর্গাপূজা আলোর বাহার,
পুলকে হৃদয় নাচে আজি সবাকার।
সপ্তমীর মহা পূজা হল সমাপন,
কবিতা লিখিল কবি ভাণ্ডারী লক্ষ্মণ।