Bangla Romantic Premer Golpo | বাংলা রোমান্টিক প্রেমের গল্প

আজকের Bangla romantic premer golpo টির নাম - "আদিম" গল্পের প্রধান চরিত্রে প্রদীপ ও কস্তুরী, বিষয় - রোমান্টিক প্রেমের গল্প, Bangla love story এবং Valobashar golpo অথবা Jokes in Bengali আরও পড়ার জন্য আমাদের ব্লগ টিকে সাবস্ক্রাইব করে আমাদের সাথে থাকুন, গল্পটি পড়িয়া যদি আপনার ভালো লাগিয়া থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট এবং শেয়ার করিতে ভুলিবেন না।

Bangla romantic premer golpo

Romantic Premer Golpo in Bengali 

আজকের গল্প - আদিম


দুটো বেণী দিয়ে গড়া প্রকাণ্ড খোঁপায় ফুলের মালা জড়ানাে, হাতে ভারী ওজনের মােটা মােটা কঙ্কন, মিহি ক্রেপের শাড়ীর জমকালাে টিসুর আঁচলটা অবহেলায় পিঠে ফেলা, পায়ের জুতায় আর হাতের ভ্যানিটি ব্যাগে শ্রীনিকেতনী শিল্পচাতুর্য অতি আধুনিকারা একখণ্ড নিখুঁত নমুনা কৃশাঙ্গী কস্তুরী, গাড়ি থেকে নেমে যেন হালকা হাওয়ার মতাে ভেসে বাড়িতে উঠে এল।
উঠেই আসতে হয়, রাস্তা থেকে বাড়িটা উঁচু।
প্রদীপ বলে, বাইশতলা দেশ।


মিথ্যে বলে না। উপরে নিচে এখানে ওখানে পথ আর বাড়ির যেন গােলকধাঁধা। কস্তুরীকে দেখে প্রদীপের একাধারে গৃহরক্ষক দেহরক্ষক সেবক পালকা সব কিছু, পাহাড়ী বালক নানকুটা হতভম্ব হয়ে চেয়ে থাকে। তার চাকরদিশায় এহেন অপরূপ আবির্ভাব কখনাে ঘটেনি।
কস্তুরী ওর স্তম্ভিত ভাবটা উপভােগ করে আরাে যেন ঝড় বইয়ে দেয় ‘ঘরে আবার চাবি লাগানাে কেন রে? কী মুশকিল? খােল খােল।
বলা বাহুল্য এমন দরাজ হুকুমের পর ইতস্ততঃ করা সম্ভব নয়। নানকু সসম্রমে দোরটা খুলে দেয়।
ভ্যানিটি ব্যাগটা দোলাতে দোলাতে দিব্য সপ্রতিভভাবে ঘরে ঢুকে পড়ে কস্তুরী। আর ঢুকেই প্রদীপের টেবিলের কাগজপত্র উলটে পালটে তচনচ করতে থাকে। কবি কোথাও কিছু লিখে ছড়িয়ে রেখে গেছে কি না।

ও বাবা! প্যাডের মধ্যে এ যে চিঠি! কস্তুরীকে মনে আছে তাহলে। আজ মাস দুই আড়াই তাে প্রায় চিঠিপত্র বন্ধ। মাঝে মাঝে দু-এক ছত্র যা পাঠায় সে আর চিঠি নয় নেহাতই দায়সারা কুশল-বার্তা।
আরে এ রীতিমতাে সাহিত্য! চেয়ারটা টেনে নিয়ে বসে পড়ে প্যাডটা খুলে ধরে কস্তুরী, তর সয় না।
বাস্ রে, এসব আবার কি লিখেছে প্রদীপ!
“রাত জেগে তােমায় চিঠিটি লিখছি কস্তুরী রাত্রে আজকাল জেগেই থাকি প্রায়, কিছুতেই কেন জানি না ঘুম আসতে চায় না। তবু এই জেগে থাকা আমার খারাপ লাগে না। মনে হয় রাতে ঘুমিয়ে থেকে ভারী ভুল করি আমরা। ঘুমিয়ে থাকি তাই পৃথিবীর সমস্ত রহস্য আমাদের অজানা থেকে যায়। আমরা যখন সারাদিন স্মৃল প্রয়ােজনের তাগিদে ছুটোছুটি করে মরি, তখন ঘৃণায় করুণায় বােবা পৃথিবী নিশ্চল দৃষ্টি মেলে তাকিয়ে থাকে।

রাত্রে যদি ঘুমিয়ে না পড়ে আমার মতাে জানলায় এসে বসাে কস্তুরী, তাহলে অনেক কিছু জানতে পারবে। জ্ঞানের পরিধি কত বেড়ে যাবে তােমার। ভারী আশ্চর্য লাগবে সুদীর্ঘকাল ধরে রাত্রিটা ঘুমিয়ে নষ্ট করে এসেছ বলে। তুমি কি জানাে কস্তুরী, রাত্রির অন্ধকারে অরণ্যে যে মর্মরধ্বনি ওঠে সে ধ্বনি কিসের? তুমি হয়তাে আজও জানাে না সে কথা, আমি জানি।

পাতায় পাতায় বাতাসের লীলামৃগয়ার মুখর চপলতা সে নয়, সে ধ্বনি কোটি কোটি অশরীরী আত্মার বিক্ষুব্ধ আর্তনাদ। প্রতি দিন প্রতি রাত্রে মুহূর্তে মুহূর্তে নিষ্ঠুর নিয়মের নিষ্করুণ আকর্ষণে যে সব হতভাগ্যরা আশা-আকাঙক্ষার ভরাপাত্র নামিয়ে রেখে এই শােভা-সম্পদময়ী ধরণী থেকে অসময়ে স্থলিত হয়ে পড়ে যাচ্ছে অনন্ত শূন্যের ক্ষুধার্ত জঠরে, দলে দলে উঠে আসে তারা, অন্ধকারের অসাবধান অবসরে। উঠে আসে ছেড়ে যাওয়া পুরানাে পৃথিবীর বুকে। উঠে এসে অবাক হয়ে যায় তারা! বেদনায় বিদীর্ণ হয়ে যায়। ধিক্কারে স্তম্ভিত হয়ে যায় পৃথিবীর দুর্ব্যবহরে! এসে চিনতে পারে না কিছু, খুঁজে পায় না নিজের পুরানাে জায়গাটাকে। বুঝতে পারে না কোথায় হারিয়ে গেল, তাকে হারিয়ে ফেলার গভীর ক্ষতচিহ্নটা? জানতাে না মমতাহীনা পৃথিবী হারিয়ে ফেলবার সঙ্গে সঙ্গেই নিমেষে মুছে ফেলে ক্ষতের সকল চিহ্ন। 


নতুন করে নিজেকে, সাজিয়ে নেয় আগামী নতুনের জন্য।
কাউকে হারিয়ে ফেলে হাহাকার করতে বসবে এত সময় পৃথিবীর হাতে নেই। বুঝতে পেরে ওরা ক্ষুব্ধ অপমানে দলে দলে গিয়ে জড়াে হয় অরণ্যে অরণ্যে। পাতায় পাতায় ছড়িয়ে পড়ে ওদের হতাশ হাহাকার। যেন মাথা কুটে কুটে সাড়া তুলতে চায় মমতাহীনার প্রস্তরীভূত বক্ষপঞ্জরে। বুঝি মনে পড়িতে দিতে চায়, আমি ছিলাম’ ‘আমি ছিলাম’ ... ‘একদা তােমার এই শােভাসম্পদের উপর ষোলো আনা অধিকার ছিল আমার, এমন নির্মম ঔদাসীন্যে আমাকে ভুলে যেও না। এক সময়ে ফিস ফিস করে কথা কয়ে ওঠে নিজেরা নিজেরা। নিশ্বাস ফেলে বলে, ‘ভুলে গেছে আমাদের! ‘আমরা নেই!' তখন হয়তাে ক্ষণকালের জন্যে অরণ্যাণী স্তব্ধ হয়ে যায়, শুধু একটা অনুচ্চারিত “হায় হায়’ স্থির হয়ে থাকে।

আবার আছড়ে এসে পড়ে নতুন দল।
আবার তাদের ভারাক্রান্ত নিশ্বাসে পাতায় পাতায় ওঠে মর্মর শিহরণ। সারারাত্রি ধরে চলে এই আনাগােনা, এই মাতামাতি।
নিরুপায় অরণ্যকে সমস্ত রাত ধরে সহ্য করতে হয় অশরীরী আত্মাদের এই অদ্ভুত আক্রমণ। উষার আলাে ফুটলে তবে অরণ্যের মুক্তি, তখন সে নিশ্বাস ফেলে বাঁচে। প্রেত আত্মারা আলাের আভাসে সচকিত হয়ে ওঠে, বুঝতে পারে জীবিত প্রাণীর রাজ্যে এ তাদের অনধিকার প্রবেশ। বুঝতে পেরে ম্লান মুখে বিদায় নেয় তারা। আমার এই অদ্ভুত কল্পনার খবর পেয়ে তুমি কি হাসছ কস্তুরী? ভাবছ দিনের আলাের কি অরণ্যে মর্মরধ্বনি ওঠে না?
ওঠে বৈকি। ওঠে!

সে ধ্বনি শাখাপত্রে বাতাসের লীলাচাপল্যের। তখন কেউ ফিস ফিস করে কথা কয়ে ওঠে না। কস্তুরী, দিনের আলােয় তুমি যদি অরণ্যের জটিলতায় ঘুরে বেড়াতে চাও, তখন যে শব্দ তুমি শুনতে পাবে, সে নিতান্তই তােমার নিজেরই পায়ের চাপে শুকনাে পাতা খুঁড়িয়ে যাওয়ার শব্দ। তখন রহস্যহীন মৌন অরণ্য গম্ভীর মুখে চেয়ে থাকবে তােমার দিকে। সারা রাত্রির মাতামাতির ইতিহাস দেখতে পাবে না তার মুখের কোনাে রেখায়। কস্তুরী, অরণ্য এত কাছাকাছি কখনাে থেকেছ তুমি, যেখান থেকে জানলা খুললেই বনের গন্ধ পাওয়া যায়? গভীর রাত্রে বিছানা থেকে উঠে এসে জানলায় দাঁড়িয়ে আবিষ্কার করেছ অরণ্য মর্মরের সত্যকার ইতিহাস?
না!

নিশ্চয় তুমি এসব দেখােনি কস্তুরী, নিশ্চয় শােনোনি এসব। যদি শুনতে পেতে তাহলে পরীক্ষায় একটা বাড়তি ডিগ্রী আর কিছু পরিমাণ বেশি নম্বর আহরণের আশায় ইট কাঠের অরণ্যে মুখ গুঁজে পড়ে থেকে অমন দুরূহ তপস্যায় মগ্ন থাকতে পারতে না। তােমার এই তপস্যাটি কী হাস্যকরই লাগছে আজ আমার কাছে। আকাঙ্খার পরিধি কত ছােট হয়ে গেছে আমাদের, ভাবলে তােমার বিস্ময় লাগে না কস্তুরী? পড়ে হাসছ?
কিন্তু সত্যি বলছি, কেন জানি না রােজ রাত হলেই এই অদ্ভুত কল্পনায় যেন পেয়ে বসে আমাকে। কী হাস্যকর লাগে নিজেদেরকে! কী তুচ্ছ লাগে দৈনন্দিন জীবন সংগ্রামের সহস্র খুঁটিনাটি!


Love - বিশেষ করে নরনারীর চিরন্তন প্রেম যে কি আশ্চর্য জিনিস এ কে না জানে। প্রেম নিয়েই বােধহয় পৃথিবীর দুই-তৃতীয়াংশ সাহিত্য রচিত হয়েছে। প্রেমের বৈচিত্র্যও তাে কম নয়। Romantic premer golpo, মিলন, বিরহ, পরকীয়া, হিংস্র বা আদিম, দেহগন্ধময়, প্লেটোনিক। দান্তে এক বিয়েবাড়িতে এক কিশােরীকে কয়েক পলক দেখে যে ফিদা হয়ে গিয়েছিলেন সেই কিশােরীর সঙ্গে তাঁর আর দেখা হয়নি, তার নাম বা পরিচয় ও জানতেন না, তবু তাকে নিয়েই Divine comedy রচনা করে ফেলেছিলেন, যা আজও কালজয়ী হয়ে বেঁচে আছে। বেঁচে আছে কালজয়ী বিয়াত্রিচেও। শরৎবাবুর devdas একরকম, আবার তারই দত্তা অন্যরকম। প্রেমের বৈচিত্র্যই তাকে এমন মহার্ঘ করে তুলেছে। এইসব নানারকম সেরা প্রেমের গল্প দিয়ে আমাদের ব্লগ টি সাজানো আছে।

কিছুদিন আগে একটা ঘটনা ঘটে গেল এখানে চিঠিতে খুলে লেখবার উপায় নেই। দেখা হবে বলব। আমার মনে হয়, হয়তাে এ সমস্ত সেই ঘটনারই প্রতিক্রিয়া। সত্যকার একটা পরীক্ষা না এলে প্যাডটা উলটে পালটে দেখে কস্তুরী। নাঃ আর কোথাও কিছু লেখা নেই। নিশ্চয় রাত্রে লিখতে লিখতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন কবি, তারপর ভাের না হতেই ছুটেছেন চাকরি বজায় রাখবার কঠোর তপস্যায়।
মৃদু একটু হাসি ফুটে ওঠে কস্তুরীর ঠোটের কেণে।
আহা বেচারা! ও কি জানত সাড়ে তিন শাে মাইল দূর থেকে হঠাৎ এসে পড়ে কস্তুরী ওর কাব্যির ওপর হানা দেবে?

আরও পড়ুনঃ Bengali jokes for whatsapp status

নিশ্চয় আবার আজ রাত্রে খাওয়া-দাওয়া সেরে দু-চারটে সিগারেট ধ্বংস করে নিয়ে মৌজ করে বসে অসমাপ্ত চিঠিখানা শেষ করত কথার জাল বুনে বুনে। মধুর রসের প্লাবন বইয়ে ফেলেও কস্তুরীকে ভাসিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি বলেই বােধহয় এবারে অদ্ভুত রসের আমদানি করতে শুরু করেছে প্রদীপ। ‘অরণ্য মর্মরের সত্য ইতিহাস!
রৌদ্রদগ্ধ বহিপ্রকৃতির দিকে একবার তাকিয়ে দেখে আর একবার হেসে ওঠে কস্তুরী। আহা বেচারা রে! শক্তি সামর্থওয়ালা এতখানি লম্বাচওড়া পুরুষ জাতটাকে ‘বিরহ জিনিসটা কী কাবুই না করে ফেলে! তা নয়তাে সমস্ত দিন খেটেপিটে এসে ইঞ্জিনিয়ার সাহেব কিনা মাঝরাত্রে জানলা খুলে জঙ্গলের দিকে তাকিয়ে বঞ্চিত আত্মাদের অতৃপ্ত হাহাকার শুনতে বসেন।

প্যাডটা চাপা দিয়ে রেখে ভ্যানিটি ব্যাগটা লুফতে লুফতে ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসে কস্তুরী। বাচ্চা চাকরটাকে ডাক দিয়ে প্রশ্ন করে, ওহে বীরভদ্র, তােমার ‘সাহেব’ কখন ফিরবেন জানাে?
পাহাড়ী ছেলেটার ভাগ্যে এমন একটি গরীয়সী প্রশ্নকারিণী কখনাে জুটেছে কিনা সন্দেহ। তবে সে বিগলিত কৃতার্থে একগাল হেসে ভাঙা বাংলায় যা বলে সেটা কস্তুরীর পক্ষে খুব হৃদয়গ্রাহী হয় না। সন্ধ্যার আগে প্রদীপের ফেরবার কোনাে আশাই নেই থাকি। আর এখন সবে বেলা এগারােটা।
অর্থাৎ কমপক্ষে এখনাে ঘণ্টা সাতেক একা থাকতে হবে কস্তুরীকে! ট্রেনে এলে এইটি হত না। 


যথারীতি খবর দিয়ে বেরিয়ে, অধীর আগ্রহে স্টেশনে অপেক্ষমান প্রদীপের কাছে এসে নেমে পড়তে পারলেই হয়ে যেত। অপ্রত্যাশিত সৌভাগ্যে দিশেহারা প্রদীপের সেই চেহারা কল্পনা করতে পারছে কস্তুরী।
তা নিজেই বা সে কি কম কবিত্বটা করে বসেছে? যেই ইচ্ছে হল আকাশে উড়ে চলে এল! হঠাৎ এসে পড়ার মজাটাই মনে রেখেছে, অসুবিধেটা ভেবে দেখেনি তাে!
এতক্ষণ কি করবে সে? স্নান আহার সেরে নিয়ে দিব্যি নিটোল একটি ঘুম দেবে?
আরে ছিঃ অসম্ভব!
তবে?

জুতাের চাপে শুকনাে পাতা গুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে বেড়িয়ে বেড়াবে বনের ধারে ধারে?
উহু, রক্ষে করাে বাবা?
তাহলে?
প্রদীপের ঘরসংসার তচনচ করে নতুন করে গােছাতে বসবে? ‘পুঁথিগত-প্রাণা’ হলেও কস্তুরী যে গৃহিণীপনার অযােগ্য নয়, একথা প্রমাণ করে দেবে প্রদীপের কাছে ? থাকগে যাক, কে অকারণ অত খাটে! সংসার করতে যখন আসবে, দেখিয়ে দেবে একেবারে। তবে কি ওর খাতাপত্র বই কাগজ তল্লাশ করবে বসে বসে? আরাে কি কি উদ্ভট পাগলামির নমুনা সংগ্রহ করতে পারা যায় তাই দেখতে?
দূর! মজুরি পােষাবে না!

সব থেকে ভালাে, যত ইচ্ছে আলিস্যি করে স্নানাহারপর্ব সেরে এই চাকরটার সঙ্গে গল্প জমানাে। তােক না বালক মাত্র, তবু কৃতার্থ হয়ে যাবে সন্দেহ নেই। শিথিল ভঙ্গিতে খোঁপাটা খুলতে খুলতে ভূভহিগ করে বলে, এই হাঁদারাম, তাের সাহেবের ঘরবাড়ি সব তাে এককথায় আমার হাতে ছেড়ে দিলি, বল্ দিকিন আমি কে?
‘হাঁদারাম’ ঘাড় হেলিয়ে বলল—জানি, মেমসাহেব।
চমৎকার! কে তােকে বলল শুনি?
কেউ বলল না। আমি বুঝছি।
বেশ করছ। যাও এখন চানের জল দাও দিকি? হুঁ, তারপর তােদের এখানে কিছু খেতে টেতে পাওয়া যাবে তাে?

খুব! যতটা সম্বব ঘাড় হেলিয়ে জবাব দেয় নানকু।
ভারী আশ্বাসের সুর ছেলেটার কণ্ঠে !
কস্তুরী হেসে ফেলে বলে শুনে বাঁচালাম। তা কি খেতে দিবি একেবারে জেনেই প্রাণ শীতল করে যাই। কী আছে তােদের ভাড়ারে ?
কথার সুখেই কথা কওয়া। খুশির পাত্র উপচে পড়লে এমনই হয় বােধহয়। পাহাড়ী ছেলেটা কস্তুরীর কৌতুক কথার অর্থ বুঝুক না বুঝুক, তবু উপযুক্ত শ্রোতার অভাবে ওর সামনেই নিজেকে ঝলসে তুলবে কস্তুরী। গানের সুরের মতাে হেসে উঠবে অকারণে, গেয়ে উটবে এক লাইন গান। কথা বলবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে প্রয়ােজনের অতিরিক্ত। প্রদীপ অনুপস্থিত। তবু সারা বাড়িতে তাে তার উপস্থিতির বাতাস বইছে। 

এ বাড়ি কস্তুরীর, এ সংসারের ওপর যথেচ্ছ কর্তৃত্বের দাবি কস্তুরীর, ভাবতে কী অপূর্ব রােমাঞ্চ ! সত্যি! বইখাতা নিয়ে তখন চলে এলেই হত প্রদীপের সঙ্গে। নাইবা অনার্স নিত, নাইবা হত ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট!
কী লাভ হবে তাতে? কী ক্ষতি হত এম.এ-টা যদি নাই দিত? প্রদীপ ‘বেচারা’, না কস্তুরী নিজেই ‘বেচারী’?
খােলা চুল আঙুলে জড়াতে জড়াতে কস্তুরী হাস্যোজ্জ্বল মুখে বলে কই বলে শুনি?
ছেলেটা মহােৎসাহে জানায়, চাল ডাল আলু পেঁয়াজ ডিম মাখন ঘি আটা-কোনাে বস্তুরই অভাব নেই সাহেবের ভাঁড়ারে। তবে যদি মেমসাহেবের মুরগির মাংস খাবার বাসনা থাকে, কিঞ্চিৎ সবুর করতে হবে। অবিশ্যি বেশি নয়, ছুটে গিয়ে ঐ বনের ধারে মনিহারীর বৌকে খবর দিয়ে আসতে যা দেরি।


মনিহারীর বৌ? সে আবার কে?
সাধারণ কৌতূহলে প্রশ্ন করে কস্তুরী। কিন্তু উত্তর শুনে কৌতুহল আর সাধারণ থাকে না, ভয়ংকর হয়ে ওঠে।
মনিহারীর বৌ!
সেই যে মনিহারী, সাহেবের ‘টুরে বেরােনাের সময় তলপি বইত, সাহেবের গাড়ি আর বন্দুক সাফ করত, যে মারা পড়ল—সাহেবেরই সেই বন্দুকের গুলিতে! তারই বৌ। সাহেবের প্রাণ বাঁচাতে পুলিসের কাছে মিছে কথা বলেছে বলে ওর আত্মীয় কুটুমেরা একঘরে করে দিয়েছে কিনা। ঐ বনের মধ্যে একটা চালা তুলে নিয়ে একা থাকে সে এখন-মুরগি পােষে, ডিম বেচে, বেতের চুপড়ি বােনে।

আরও পড়ুনঃ গল্পঃ নেকী 

তাকে একবার খবর দিতে পারলেই কস্তুরীর বাসনা পূর্ণ হয়। এমন কি ও এসে মাংস রান্না করে দিয়ে যেতে পারে পর্যন্ত! খুব ভালাে রাঁধে ও। কতদিন রান্না মাংস চুপি চুপি রেখে যায় সাহেবের জন্যে, সাহেব না জেনে তারিপ করেন এই আনাড়ী ভূত নানকুকে। আঙুলের আগায় খােলা চুলের গােছা এঁটে এঁটে বসেছে, লাল হয়ে উঠেছে আঙুলের ডগা। কিন্তু মুখটা? মুখটা অমন লাল হয়ে উঠেছে কেন কস্তুরীর? অদৃশ্য কোনাে রঙ্কুতে কেই ওর কণ্ঠনালীটা কি জড়িয়ে জড়িয়ে পাক দিচ্ছে? ও বসে পড়েছে উঠোনে পড়ে থাকা তেলচিটে খাটিয়াটার ওপর! ধুলােয় লুটোচ্ছে দামী শাড়ীর ঝকঝকে আঁচলটা। এই তবে ‘ঘটনা?

অনেক কষ্টে কণ্ঠস্বরকে এইটুকু মুক্তি দিতে পারে কস্তুরী-ও-ঐ মনিহারী গুলি খেলাে কেন?
ছেলেটা অকপট সরলতার ব্যক্ত করে, যদিও অপরের কাছে বলতে মানা কিন্তু কস্তুরী যখন নিতান্তই সাহেবের নিজের মেমসাহেব, তখন বলতে বাধা নেই। পুলিস জানে বটে বন্দুক সাফ করতে গিয়ে হঠাৎ ভুলক্রমে গুলি ছুটে মারা গেছে মনিহারী, ওর বৌও বলেছে সেই কথা পুলিসের কাছে, কিন্তু আসল কথা তা নয়। রাতের অন্ধকার সাহেব ওর চোখ দেখে বনবিড়াল ভেবে ভয় খেয়ে গুলি করেছেন। –ভয়? কিসের ভয়! মানুষকে বনবিড়াল ভাববার মানে? আর্ত চিৎকার করে ওঠে কস্তুরী।
ছেলেটা হতাশভাবে দুই হাত উলটে বলে, কি জানি মেমসাহেব। ও পাগলাটা কেন যে রাতভাের জেগে জেগে সাহেবের জানলায় চোখ রেখে ঘর পাহারা দিত কে জানে!

ওর চোখ দুটো ছিল ঠিক বনবিড়ালের মতাে। রাতে আগুনের মতাে জ্বলত। .. ঘুমের ঘােরে উঠে সাহেব হঠাৎ ভয় খেয়ে
ধীরে ধীরে ধাতস্থ হচ্ছে কস্তুরী।
গম্ভীরভাবে বলে তা ওর বৌ পুলিসের কাছে মিছে কথা বলতে গেল কেন?
ছেলেটা যেন কস্তুরীর অজ্ঞতার অবাক হয়ে যায়। নিজে নিতান্ত বিজ্ঞের মতাে বলে-না বললে সাহেবের নামে কেস হত না?
হতই বা! উদ্ধত স্বরে বলে কস্তুরী, সাহেবের ফাসি হলে ওর কি লােকসান ছিল? ওর নিজেরা স্বামী খুন হয়ে গেল ছেলেটা নিজের ঠোটের উপর একটা আঙুল ঠেকিয়ে কণ্ঠস্বর খাটো করবার ইঙ্গিত জানায় কস্তুরীকে। চুপি চুপি প্রতিপ্রশ্ন করে সাহেবের ফাসি হলে ওর আদমি বেঁচে উঠত?

এত বড়াে মহৎ প্রশ্নের উত্তর সাধারণ মানুষের কাছে থাকে না। কিন্তু কস্তুরী কেন সেই মহানুভব নারীর কাছে কৃতজ্ঞ হচ্ছে না? যার একটি মাত্র কথায় ফাসি হয়ে যেতে পারত কস্তুরীর স্বামীর সে সুযােগ গ্রহণ না করে যে নিজের স্বামী হত্যা কারীর প্রাণরক্ষা করেছে!
বরং আরাে রুক্ষ, আরাে ক্রুদ্ধ স্বরে মন্তব্য করে বসে কস্তুরী, নাই বা বাঁচল। মানুষ। খুন করলে ফাসি হওয়াই তাে উচিত।
পাহাড়ী ছেলেটা চমকে মুখ তুলে এক নিমেষে তাকিয়ে থাকে কস্তুরীর মুখের দিকে। তারপর গম্ভীরভাবে বলে চলে যায়, গােসলখানায় জল দিচ্ছি। সাত ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় না, বেলা তিনটের মধ্যেই এসে পড়ে প্রদীপ। এরােড্রামের এক ছােকরা কর্মচারী কী সূত্রে যেন চিনত কস্তুরীকে সেই স্বতঃ প্রবৃত্ত হয়ে খবর দিয়েছে প্রদীপকে।


ছুটে এসেছে প্রদীপ গাড়ি খানার ‘হাওয়া গাড়ি’ নাম সার্থক করে। ছুটে এসেছে বিস্ময় আনন্দ রাখতে রাজী নয় সে, ছােকরা চাকরটার সামনেই কস্তুরীকে প্রায় জড়িয়ে ধরে আর কি!
কিন্তু আশ্চর্য!
কস্তুরী কী কঠিন আর কী নিরুত্তাপ !
জমাট কঠিন হিমশীতল একখণ্ড বরফ স্বামীকে উপহার দেবে বলেই কি এই হিমপাহাড়ের দেশে ছুটে এসেছে কস্তুরী? রােদপড়া বরফের মতােই কী ভয়ানক ঝকঝক করছে ওর সাদা উজ্জল চোখ দুটো!
কী হল কস্তুরী? শরীর খারাপ লাগছে?

শরীর? হেসে ওঠে কস্তুরী, আশ্চর্য রকমের ভালাে লাগছে। পাহাড়ে হাওয়ায় এখুনি খিদে বেড়ে যাচ্ছে।
প্রদীপ ব্যথিত স্বরে বলে এলে যদি তাে অমন দূরে কেন কস্তুরী? কী অদ্ভুত লাগছে তােমাকে! তুমি বলে যেন চেনাই যাচ্ছে না।
কস্তুরী আর একবার হাসির ঝিলিক দিয়ে ওঠে, রাত জেগে ‘ক্ষুধিত আত্মার’ নিশ্বাস শুনে শুনে তােমার পার্থিব দৃষ্টিটা কিছু খাটো হয়ে গেছে বােধ হয়। -ওঃ! তুমি আমার চিঠিটা পড়েছ বুঝি? চমকে ওঠে প্রদীপ। ওসব আমার অর্থহীন পাগলামি! দেখলে কেন? লিখেছিলাম তােমাকে, কিন্তু পাঠাতাম না। তুমি এসেই সব দেখে ফেললে?
অন্যায় হয়ে গেছে না?

কস্তুরী বাঁকা কটাক্ষে বলে হঠাৎ বড়াে অসুবিধেয় পড়ে যেতে হল কেমন ? যাক কালই ফিরছি, বেশি অসুবিধা বাড়াব না।
ব্যাকুল প্রদীপ এ রহস্যের মীমাংসা করতে পারে না।
এমন হঠাৎ এসে পড়ল কেন কস্তুরী? এসেছে যদি তাে এমন দূরত্বের আবরণে ঘিরে রেখেছে কেন নিজেকে? কেন ওর স্বভাবসিদ্ধ প্রগলভতায় বেপরােয়াভাবে স্বামীর কণ্ঠলগ্ন হয়ে ঝুলে পড়ে বলছে না—কী মজা করলাম বলাে তাে? কেমন জব্দ! চিঠি না দিয়ে নিশ্চিত হয়ে থাকবে আর ?
যাক গে। এখন আর রহস্যভেদের চেষ্টা করে লাভ নেই।

রাত্রিটা তো হাতে আছে সমস্ত দ্বন্দ্ব, সমস্ত বাধা, যত কিছু অভিমান আর ভুল বােঝার মধুর পরিসমাপ্তির আশ্বাস নিয়ে! এখন চলুক সাধারণ আতিথ্যের পালা। তা সেটা উভয় পক্ষেই চলে। ভদ্রতা আর সৌজন্যের কে কত নিখুঁত অভিনয় করতে পারে তার প্রতিযােগিতা চলে যেন। চা খাওয়া সারা হতে বেলা পড়ে যায়। প্রদীপ বলে চলাে কস্তুরী, বেড়িয়ে আসা যাক একটু।
বেড়াতে? কোথায় ?
বনে জঙ্গলে যেখানে তােমার খুশি। আজ সব তােমার ইচ্ছেয় কস্তুরী তীক্ষ্ণ হেসে বলে ওঠে, বনের পথটা তােমাকে ভীষণভাবে টানে, তাই না?

প্রদীপ একটু থতমত খেয়ে ওর দিকে তাকায়, তারপর অবাক হয়ে বলে ঠিক বলেছ কস্তুরী! সত্যিই, অরণ্য যেন অবিরত আমাকে আকর্ষণ করতে থাকে। কেন বল তাে? নিজেই বুঝতে পারি না আমি কেন এমন হয়। কতদিন মাঝরাতে ইচ্ছে করে বেরিয়ে পড়ি, দেখি কি রহস্য লুকানাে আছে ওখানে। কেন কিছুতেই ওকে ভুলে থাকতে পারি না আমি। তুমি বলতে পারাে কস্তুরী, কেন এমন হয়?
পারি। গম্ভীরভাবে উত্তর দেয় কস্তুরী, বুনাে পাহাড়ী মেয়েরা অনেক কিছু মন্ত্রতন্ত্র তুকতাক জানে।
ওর মানে? ও আবার কি একটা যা খুশি উত্তর হল? ও কথা বললে যে?
বললাম এমনি। চলাে চলাে দেখে আসি, তােমার আরণ্যের আত্মাকে। দূর ছাই। প্রদীপ চেষ্টাকৃত লঘুস্বরে বলে কি দু-পাতা ছাইপাঁশ বাজে কথা লিখে রেখে তােমার মাথাটাকেই বিগড়ে দিয়েছি দেখছি।
বেড়াতে বেড়াতে সন্ধ্যা পার হয়ে যায়।


আরও পড়ুনঃ গল্পঃ জল পরী 

কৃয়পক্ষের মৃদু জ্যোৎস্না গাছের ফাঁকে ফাঁকে কোথাও হালকা কোথাও ঘন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পায়ের চাপে চাপে শব্দ উঠছে শুকনাে পাতা গুঁড়িয়ে যাওয়ার। আগে কিছু কিছু কথা হচ্ছিল, ক্ৰমশঃ বন্ধ হয়ে গেছে।
নির্বাক দুটি প্রাণী যেন কোনাে অমােঘ বন্ধনে বন্দী হয়ে যন্ত্রের মতাে চলেছে পাশাপাশি।
হঠাৎ এক সময় মৃদু একটু হেসে কস্তুরী বলে ওঠে, দেখ অরণ্যের জটিলতায় পথ হারিয়ে ফেলবে না তাে?
প্রদীপ দাঁড়িয়ে পড়ে। একটু চুপ করে থেকে স্থির স্বরে বলে বােধকরি অমনি কোনাে সন্দেহ তােমার পথকে জটিল করে তুলেছে কস্তুরী। কিন্তু নিশ্চিন্ত থেকো, আমার পথ হারাবে না। আমার ধ্রুবতারা আছে।
কই? কোথায় ?

একটু দুর্বল আর ফ্যাকাশে শােনায় কস্তুরীর গলা।
বাঃ বলে খেলাে হব কেন? সে হল নিজের জিনিস।
উত্তর দিতে গিয়ে থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে কস্তুরী। সভয়ে বলে, বনের ভেতর ওখানে। আলাে কিসের?
আলাে নয় আগুন। শুকনাে পাতা জ্বেলে ভাত রাঁধছে......ওকি ওকি! পাথর ছুঁড়ছাে কেন ?...কী সর্বনাশ! হঠাৎ একি- পথ থেকে কুড়িয়ে নেওয়া ভারী পাথরের টুকরােটা হাত থেকে ফেলে দিয়ে কস্তুরী প্রায় হাঁপাতে হাঁপাতে বলে দেখতে পাচ্ছ না, ওখানে কি যেন একটা বুনাে জানােয়ার বসে রয়েছে ?
কী ভয়ানক! ও যে মনিহারীর বৌ! ঐ তাে পাতা জ্বেলে ভাত রাঁধছে। কিম্ভুত মতাে বিশ্রী জোব্বাজাব্বা পরে আছে বলে ঐ রকম দেখাচ্ছে! ওর গল্প করব তােমার কাছে। এখন বলছে জানােয়ার, শুনে বলবে দেবতা। ও আমার প্রাণদাত্রী তা জানাে?

আচ্ছা এখন পরিচয় করিয়ে দিই, পরে সব বলব ; ওরে এই বৌ! এ মনিয়ারের বৌরে পায়ে পায়ে দুজনেই বেশ খানিকটা এগিয়ে গেছে ততক্ষণে। সাড়া পেয়ে আগুনের কাছ থেকে উঠে আসে মানুষটা। উঠে এসে দাঁড়িয়ে পড়ে। কথার উত্তর দেয় না, নিষ্পলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকা দুটো মানুষের দিকে।
গাছের সারি এখানে পাতলা, জ্যোৎস্না যেন খানিকটা হাঁপ ফেলে বেঁচেছে। সেই মৃদু জ্যোৎস্নায় সামনাসামনি স্থির হয়ে থাকে দু-জোড়া চোখ। খুব স্পষ্ট কিছুই দেখা যায় না। অস্পষ্ট হয়ে গেছে সিফা শাড়ী, ওমেগা ঘড়ি, জয়পুরী কঙ্কন আর শান্তিনিকেতনী বটুয়া.....অস্পষ্ট হয়ে গেছে বহু ব্যবহৃত ঘাগরার গায়ে বেরঙা ছিটের তালি, দড়া দড়া সেলাই। অস্পষ্ট হয়ে আছে সমস্ত পরিবেশ। স্পষ্ট হয়ে উঠেছে শুধু দু-জোড়া চোখ।
কী আছে সে চোখে?

প্রভুপত্নীর প্রতি সসম্রম সমীহ?
স্বামীর প্রাণদাত্রীর প্রতি সুগভীর কৃতজ্ঞতা?
সে চোখে আছে শুধু আদিম অরণ্যের নিবিড় ছায়া, অথবা ছায়া নয় আগুন। আগুন যারা জ্বলাতে জানত না সেই গুহাবাসিনী আদিম প্রপিতামহীদের চোখে যে আগুন ঝিলিক মারত সেই আগুন!
পরিবেশটা সহনীয় করে তুলতে প্রদীপ বুঝি বলতে চেষ্টা করে, কি রে রান্না করছিস?
কিন্তু গলা দিয়ে ওর স্বর ফোটে না। যেমন এসেছিল তেমনি ফিরে যায় মনিহারীর বৌ, শুধু অবহেলার একটা সেলাম জানিয়ে।
ফেরার পথে হালকা হাসির ভঙ্গিতে কস্তুরী বলে, উঃ কী ভয়ানক চোখ দুটো ওর!

যেন জ্বলছিল। ভাগ্যিস তােমার বন্দুকটা সঙ্গে ছিল না! থাকলে হয়তাে বা বনবিড়াল ভেবে গুলি করে বসতাম।
চমকে ওঠে প্রদীপ। কে বলল ওকে?
মুহূর্তে সব স্পষ্ট হয়ে যার ওর কাছে। ওঃ তাই! তাই এই ভাবান্তর কস্তুরীর! কিন্তু বেশ স্থির কৌতুকের ভঙ্গিতেই বলে, তবু ওর বাঁচাটা নিতান্তই ভাগ্য বলতে হবে, নইলে অস্ত্রের অভাব তত ছিল না, কস্তুরী ? আদিম পৃথিবী সেই আদিম বর্বর যুগ থেকে এই সভ্যভব্য আণবিক যুগ পর্যন্ত মানুষের হাতের কাছে পাথরের টুকরাের জোগান ঠিকই রেখেছে। প্রান্তর যুগ শেষ হয়ে গেছে বলে যে সে অস্ত্রে কাজ হয় না তা তাে নয়?

@👉 Bangla Romantic Premer Golpo টি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার এবং কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না.....           
Prosanta Mondal

Hey Guys My Name Is Prosanta Mondal From Kolkata, India. I Am A Professional Blogger and Creative Content Writer.

Post a Comment

Appreciate Your Valuable Feedback. I Hope You Like Post And Subcribe Our Blog. Please DO NOT SPAM - Spam Comments Will Be Deleted Immediately.

Previous Post Next Post